ফাইভারে কাজ পাওয়ার কয়েকটি উপায়
বর্তমান সময়ে ফাইভার অন্যতম একটি মার্কেটপ্লেস। এই মার্কেটপ্লেসে অনেক ক্লাইন্ট হয়েছে সেই সাথে অনেক ফ্রিল্যান্সার ফাইভারে কাজ করে যাচ্ছে। ফাইভারে কাজ করার প্রধান বিষয় হল আপনার একটি একাউন্ট লাগবে।
মূলত ফাইভারের মূল উদ্দেশ্য হলো একটি মার্কেটপ্লেস তৈরি করা। যেখানে রেজিস্ট্রেশন করে একাউন্ট তৈরি করা হবে এবং ক্লায়েন্ট এর মাধ্যমে কাজ পাবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ফাইভারে কাজ পাওয়ার কয়েকটি উপায়
ফাইভার কাকে বলে
ফাইভার একটি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস। ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী ফাইবার রিলিজ করা হয়। বর্তমানে ফাইবারে অনেক কর্মচারী কর্মরত আছে। পরিসংখ্যান বলছে ৪.৩ মিলিয়ন একটিভ বায়ার রয়েছে ফাইভারে।
যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার তাদের জন্য ফাইভার একটি নির্ভরযোগ্য মার্কেটপ্লেস। কেননা এখানে কঠিন এবং সহজ দুই ধরনের কাজ পাওয়া যায়। এই মার্কেটপ্লেসে নতুন ফ্রিল্যান্সার এবং পুরাতন ফ্রিল্যান্সারদের কাজের কোন অভাব হয় না।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
ফাইভারে যেভাবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করবেন
ফাইভারে ক্যারিয়ার তৈরি করা অনেকাংশে সহজ। কেননা ফাইভারে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অনেক সুযোগ থাকে। তাই আপনি যদি নতুন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে ফাইভারে আপনার ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারবেন। ফাইভারে ক্যারিয়ার করতে গেলে বেশ কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। চলুন আমরা সেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।
প্রোফাইল তৈরি করতে হবেঃ ফাইভারে ক্যারিয়ার তৈরীর প্রথম ধাপই হচ্ছে আপনাকে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। অবশ্যই আপনার প্রোফাইলে যে ছবি দেয়া থাকবে তা প্রফেশনাল হতে হবে। আপনাকে ডিসক্রিপশন অবশ্যই বিস্তারিতভাবে এবং ভালোভাবে লিখতে হবে। এতে করে বায়ার আপনার সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা নিবে।
এছাড়া আপনি কি কি সার্ভিস দিবেন তা আপনাকে তুলে ধরতে হবে। এতে করে যেটা হবে সেটা হলো বায়ার আপনাকে কাজ দিতে বাধ্য হবেন। আপনাকে সবকিছু গুছিয়ে লিখতে হবে। তাহলে বায়ার আপনার সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবে।
আপনার স্কিল এর পরীক্ষা দিতে হবেঃ ফাইবারে প্রোফাইল তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে আপনার স্কিল এর একটি পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষাটি দিলেও চলে আবার না দিলেও চলে তবে আপনি যদি চান আপনার প্রোফাইলটি রেংকিং এ আসো তাহলে পরীক্ষা দিতে হবে।
গিগ তৈরি করতে হবেঃ আপনার প্রোফাইলের কাজটি যদি শেষ হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে একটি গিট তৈরি করতে হবে। গিট তৈরি করার উদ্দেশ্য হলো আপনি যে প্রফেশনাল ভাবে কাজ করবেন তা বুঝানো। বায়ার যাতে আপনাকে কাজ দেয় সেজন্য বিগের টাইটেল আকর্ষণীয় হতে হবে। গিগ যদি আকর্ষণীয় ও সুন্দর হয় তাহলে বায়ার আপনাকে কাজ দিতে বাধ্য থাকবে।
দিকে আপনার কাজের রেট খুব চিন্তা করে উল্লেখ করবেন। প্রথম অবস্থায় কি কে অতিরিক্ত রেট তুলে ধরবেন না। তাহলে বায়ার আপনাকে কাজ দিতে চাইবে না। প্রথমে চেষ্টা করবেন অল্প রেটে কাজ করার। পরে যখন বায়ার পার্মানেন্ট হয়ে যাবে তখন আপনি বেশি রেট চাইবেন। গিগের ইম্প্রেশন বাড়ানোর জন্য আপনি একটি থাম্বনেল দিতে পারেন।
ফাইভারের কাজ করার পদ্ধতি
ফাইভার মূলত একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ এই মার্কেটপ্লেস এ কাজ করে। এখানে মূলত দুই ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। এক হল বায়ার, অন্যটি সেলার। আপনি যদি কাজ করতে যান তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট লাগবে আর যদি কাজ করিয়ে নিতে চান তাহলে বায়ারের প্রোফাইল লাগবে।
বায়ারদের একাউন্ট অন্যদের থেকে একটু ভিন্ন হয়। ফাইভারের মূল উদ্দেশ্য হলো মার্কেটপ্লেস তৈরি করা। আর সেই মার্কেটপ্লেস এ রেজিস্ট্রেশন করে একাউন্ট তৈরি করবে। সেখানে সার্ভিস ক্রয় বিক্রয় হবে বায়ার এবং সেলারের মাধ্যমে।
আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে আপনাকে এই মার্কেটপ্লেসে গিগ পাবলিশ করতে হবে। এই দিকে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা কাজের ধরন কাজের রেট সবকিছু উল্লেখ থাকবে। ধরুন আপনি বায়ারকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে দিবেন কিন্তু এর জন্য আপনি ২০০ ডলার দাবি করলেন তাহলে বায়ার কিন্তু আপনাকে কাজ দিবে না। এত বেশি রেট বলা যাবে ্না।
আপনি সময় মত কাজ ডেলিভারি দিতে না পারলে আপনার কিকের রেংকিং কমে যাবে। কাজ শেষ হওয়ার প্রায় ১৪ দিন পর পেমেন্ট পাওয়া যায়। আপনি ১০ ডলার হলে উইথড্র করতে পারবেন কিন্তু তা পেপালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি ব্যাংকের মাধ্যমে বা পেওয়ানের মাধ্যমে নিতে চান তাহলে ২০ ডলার হলে উইথড্র দিতে পারবেন। মূলত এগুলোই হল ফাইবারের কাজের পদ্ধতি।
আরো পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম
ফাইভারে কাজ পাওয়ার কয়েকটি উপায়
অনেকের অভিযোগ ফাইভারে অ্যাকাউন্ট খুলে কোন কাজ পাইনি। আসল কথা হচ্ছে তারা ঠিকমতো তাদের প্রোফাইলই সাজাতে পারেনি। সেজন্য কোন কাজ পায়নি। কারণ বায়ার সর্বপ্রথম আপনার প্রোফাইল দেখবে আপনি আপনার প্রোফাইলে কি ডিসক্রিপশন দিয়েছেন সেটা দেখবে তারপরে আপনাকে কাজ দিবে।
আপনার ডিসক্রিপশন এবং প্রোফাইল দেখে যদি বায়ারের পছন্দ হয় তাহলে আপনি কাজ পাবেন। আর যদি আপনার ডেসক্রিপশন এবং প্রোফাইল দেখে পছন্দ না হয় তাহলে কাজ পাবেন না। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে আপনাকে কোন একটি বিষয়ে দক্ষ হতে হবে তাহলে আপনি এই মার্কেটপ্লেসে কাজ পাবেন। আপনি যদি দক্ষ না হোন তাহলে কিভাবে কাজ পাবেন?
ফাইভারে কাজ পাওয়া কঠিন কিন্তু আপনি যদি দক্ষ হন আর কিছু বিষয় যদি মাথায় রাখেন তাহলে অতি সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন। মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু টিপস মাথায় রাখতে হবে। আসুন আমরা সেই সকল টিপস সম্পর্কে জেনে নিই।
প্রফেশনাল প্রোফাইলঃ শুধু মার্কেটপ্লেসে প্রোফাইল তৈরি করলেই হবে না প্রোফাইলটি অবশ্যই প্রফেশনাল হতে হবে। আপনার ছবি যেন প্রফেশনাল দেখায় সেইভাবে একটি ছবি তুলে আপনি প্রোফাইলে আপলোড দিবেন। প্রোফাইলের র্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য আপনাকে আপনার কাজের ধরন উল্লেখ করতে হবে আপনি কি ধরনের কাজে দক্ষ সেটি আপনাকে তুলে ধরতে হবে বায়ার কে আকর্ষণ করার জন্য।
গিগ টাইটেল যাচাইঃ মার্কেটপ্লেস এর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো গিগ। আপনার গিগের টাইটেলটি ঠিকভাবে দিতে হবে এবং সেটি যাচাই করতে হবে। ক্লায়েন্টকে আকৃষ্ট করার অন্যতম একটি দিক হলো গিগ টাইটেলে যাচাই করা।
গিগ ভিডিও বানানোঃ আপনার দ্বারা যদি সম্ভব হয় তাহলে গিগের একটি ভিডিও বানান। এটা আপনাকে মার্কেটপ্লেস এ কাজ পেতে সাহায্য করবে। যেসব ফ্রিল্যান্সাররা গিয়ে ভিডিও দিয়ে রাখেন তারা অতি সহজে কাজ পেয়ে থাকেন। ভিডিও বানানোর উদ্দেশ্য হলো আপনার কাজকে ভালোভাবে বুঝানো।
থাম্বনেল দিতে হবেঃ বায়ারকে আকৃষ্ট করতে আপনাকে থাম্বনেল দিতে হবে। আপনার গিগের থাম্বনেল ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে দেখবেন।
ক্লায়েন্ট কে রিকোয়েস্ট পাঠানোঃ শুধু প্রোফাইল তৈরি করলেই হবে না বা গিট পাবলিশ করলেই হবে না আপনাকে রিকোয়েস্ট পাঠাতে হবে। বায়ারের সাথে অবশ্যই ইংরেজিতে কথা বলতে হবে। আপনার ইংরেজি লিখার সঠিক হতে হবে। ইংরেজি এমন ভাবে লিখতে হবে যেন বায়ার আপনার কথাগুলো বুঝতে পারে।
সেবার ধরনঃ আপনি কি সেবা বা সার্ভিস দিবেন সেই ধরনটা তুলে ধরতে হবে। আপনাকে আপনার প্রোফাইলে আপনার সেবা বা সার্ভিসের ধরন তুলে ধরতে হবে যাতে বায়ার তা দেখে আকৃষ্ট হয় এবং আপনাকে কাজ দেয়।
অতিরিক্ত রেট না ধরাঃ আপনি যদি নতুন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে কখনোই দিকে অতিরিক্ত রেট উল্লেখ করবেন না এতে ক্লাইন্ট আপনাকে কাজ দিবে না। অল্প রেটে কাজ করবেন পরে যখন একদম দক্ষ হয়ে যাবেন তখন আস্তে আস্তে রেট বাড়াবেন এতে করে ক্লাইন্টের আপনার প্রতি একটি আস্থা তৈরি হবে।
আরো পড়ুন: কিডনি ভাল রাখার উপায়
ফাইভারে যেসব কাজ করা যায়
ফাইভার হল ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস। অন্যান্য মার্কেটপ্লেস এর তুলনায় ফাইভারে কাজ বেশি পাওয়া যায় বিশেষ করে যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার তারা বেশি এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করে থাকে। এটি এমন একটি মার্কেট প্লেস যেখানে আপনি আপনার সার্ভিস গুলো সেল করতে পারবেন। এই মার্কেটপ্লেসে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন। যেমনঃ ওয়েব ডিজাইন, আর্টিকেল রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
ফাইভারের কাজ কি
ফাইভার হল এমন একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে অর্থের বিনিময়ে একজন মানুষকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়। আপনি যদি কোন একটি বিষয় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে ফাইবারে একটি প্রোফাইল তৈরি করবেন এবং প্রোফাইলটি সুন্দরভাবে সাজাবেন সে প্রোফাইলের ডেসক্রিপশন লিখবেন এবং আপনার কাজের রেট তুলে ধরবেন। আপনার ডেসক্রিপশন যদি ভালো হয় তাহলে বায়ার আপনাকে কাজ দিতে দ্বিধাবোধ করবে না।
ফাইভারে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে
বর্তমান সময়ে এই মার্কেটপ্লেসে চাহিদা বাড়ছে। যতদিন যেতে থাকবে এই মার্কেটপ্লেসের চাহিদা আরো বাড়বে। নতুন ফ্রিল্যান্সার পুরাতন ফ্রিল্যান্সার সবাই ফাইভার এ কাজ করে থাকে। এই মার্কেটপ্লেসে যেমন কঠিন কাজ পাওয়া যায় তেমনি সহজ কাজ পাওয়া যায় বলে এই মার্কেটপ্লেস এর চাহিদা সবথেকে বেশি।
ফাইভারে বর্তমানে বেশ কিছু কাজের চাহিদা রয়েছে। যেমনঃ ওয়েব ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, ব্যানার তৈরি্ ব্লগিং ইত্যাদি। বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় কাজ হল ব্লগিং। অন্যান্য কাজের তুলনায় ব্লগিংয়ে চাহিদা সবথেকে বেশি।
লেখকের মন্তব্য
উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অবশ্যই ফাইভার সম্পর্কে ধারণা চলে এসেছে। যদি আপনাদের ধারণা না থাকে তাহলে উপরের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে আসুন। কাজ পেতে হলে আপনাকে একটি প্রোফাইল দার করাতে হবে সেই প্রোফাইলে ডেসক্রিপশন ভালোভাবে লিখতে হবে তারপরে পাবলিশ করতে হবে যদি সম্ভব হয় গিগে থাম্বনেল দিবেন। আরো ভালো হয় যদি আপনি গিগে ভিডিও দিতে পারেন এতে বায়ার আপনাকে অতি সহজে কাজ দিবে। আশা করি আমার আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সবার সাথে শেয়ার করবেন
স্কয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url