কলা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। আমরা অনেকেই জানিনা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা না জেনে কলা খেয়ে থাকি। কলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
আপনি যদি নিয়মিত কলা খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। চলুন কলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কলা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা কলা খাই ঠিকই কিন্তু কয়জনই বা কলার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। কোন কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। কম বেশি আমরা সবাই কলা খায় কিন্তু কলার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা তেমন কেউ জানি না। আসুন এবার আমরা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানি।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কলা খেলে কষ্ট কাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগে ভুতে থাকেন তাহলে ডাক্তারও আপনাকে পরামর্শ দিবে নিয়মিত কলা খাওয়ার জন্য।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ যাদের হজমে সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন দুইটি করে কলা খাবেন। বদহজমের সমস্যা থেকে একমাত্র মুক্তির উপায় হল কলা খাওয়া তাই কলা খাবেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ কলা খেলে প্রচুর পুষ্টি পাওয়া যায়। আমাদের শরীরের যেমন পুষ্টি দরকার তেমনি ত্বকেরও পুষ্টির দরকার। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত কলা খান।
ওজন বাড়াতে সাহায্য করেঃ যারা খুবই রোগা পাতলা চিকন তারা যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে কলা খায় তাহলে তাদের ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ওজন বাড়াতে কলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কলাতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে যা আপনার প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে রোজ কলা খান তাহলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
কিডনি ভালো রাখেঃ যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কেননা কলা কিডনিকে সতেজ রাখে এবং কিডনি ফাংশন ভালো রাখে।
ইমিউন সিস্টেম উন্নত করেঃ কলাতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেমন ভিটামিন এ ভিটামিন ই ভিটামিন সি যা বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত কলা খান তাহলে আপনার ইমিউন সিস্টেম উন্নত হবে।
ক্যান্সার রোধ করেঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এই ল্যাকটিন ক্যান্সার রোধ করতে পারে। যারা নিয়মিত কলা খায় তাদের কোন ক্যান্সার হয় না তাই ক্যান্সার রোধে নিয়মিত কলা খান।
শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতেঃ যারা নিয়মিত খেলাধুলা করেন বা জিম করেন তাদের প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। আর এই শক্তি বাড়াতে কলার দরকার হয়। নিয়মিত কলা খেলে শরীরে প্রচুর শক্তি বৃদ্ধি পায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃকলা আমাদের হার্টের জন্য প্রচুর উপকারী একটি জিনিস। কলাতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে যা হৃদরোগের চোখে অনেক আসে কমিয়ে দেয়।
আরো পড়ুনঃ সকালে গরম পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন দুইটি কলা আপনার যেই সব উপকার করবে
সুস্থ থাকতে হলে আমাদেরকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইটি করে কলা খাওয়া উচিত। কলায় থাকে প্রচুর পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কলাতে প্রচুর ফাইবার এবং আঁশ রয়েছে। নিয়মিত দুটি করে কলা খেলে ক্ষুধা কম লাগবে ক্ষুধা কম লাগলে খাওয়া চাহিদা কমবে যার ফলে ওজন বাড়বে না।
শরীরের লোহিত রক্তকণিকা কমে গেলে হিমোগ্লোবিন ও কমে যায় আর হিমোগ্লোবিন কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় শরীরে।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান আয়রন খেলে শরীরের রক্ত উৎপাদন বাড়ে। আয়রন শরীরের লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে তাই আপনি যদি প্রতিদিন দুইটি করে কলা খান তাহলে আপনার শরীরে লহিত রক্তকণিকা বাড়বে সেই সাথে শরীরে রক্ত উৎপাদন বাড়বে।
কলাতে প্রচুর পরিমানে সেরোটনিন হরমন রয়েছে। এই সেরা টনিন হর মনকে হ্যাপি হরমোন বলা হয়। মন মেজাজ ভালো রাখতে হলে আপনি নিয়মিত দুইটি করে কলা খান এর ফলে আপনার শরীরে হ্যাপি হওয়ার মন তৈরি হবে যার ফলে আপনার মন মেজাজ ভালো থাকবে।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। শরীরের সুস্থ কোষ তৈরি করতে কলার ভূমিকা অনেক। আপনার যদি মনে হয় যে আপনার শরীরে ভিটামিন কম আছে শরীরে শক্তি কম পাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনি ডিউটি করে কলা খেতে পারেন এতে করে আপনার শরীরে শক্তি আসবে। তাই বলা যায় কলার অনেক উপকারিতা রয়েছে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কলার উপকারিতা কত।
একটি কলাতে কত ক্যালরি
প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে কলাতে। মাঝারি সাইজের একটি কলাতে রয়েছে একশত পাঁচ ক্যালরি, এছাড়া তিন গ্রাম ফাইবার, এক গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া কলায় রয়েছে ভিটামিন বি সিক্স এবং পটাশিয়াম যার শরীর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি উপায়
সকালবেলায় কলা খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায়
সকালবেলায় কলা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। সকালবেলা কলা খেলে যে উপকার পাওয়া যায় তা আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা। আপনি যদি গলার উপকারিতা বুঝতে চান তাহলে বেশি করে কলা খাবেন।
যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারা সকালে নাস্তার সাথে দুইটি করে কলা খাবেন। এতে আপনার শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পাবে পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। সকালবেলায় কলা খেলে পেট পরিষ্কার হয় এটা আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে।
কলা খাওয়ার সময় একটাই বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটা হলো যে একদম খালি পেটে কলা খাওয়া যাবেনা কিছু খেয়ে তারপরে কলা খেতে হবে। আপনি যদি একদম খালি পেটে কয়েকটি কলা খেয়ে ফেলেন তাহলে এর ফলে আপনার বদহজম হবে পেট খারাপ হবে।
ওজন যদি কমাতে চান তাহলে নাস্তার সাথে আপনি দুটি কলা খাবেন তাহলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে কলা খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে তাই ক্ষুদা কম অনুভূত হয় আর ক্ষুধা কম অনুভূত হলে আপনি খাবার খাবেন কম যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
রাতের বেলায় কলা খেলে যে সব উপকার পাওয়া যায়
সাধারণত রাতের বেলায় কলা খেলে উপকারের বদলে বরং অপকারই হবে। আমরা অনেকেই আছি সকালবেলায় কলা খাই আবার রাতের বেলাতেও কলা খায় কিন্তু এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কলাতে প্রচুর আয়রন রয়েছে এবং পটাশিয়াম রয়েছে যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনি যদি নিয়ম করে রাতের বেলায় একটি কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার ঘুম ভালো হবে।
তবে রাতের বেলায় অতিরিক্ত কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে রাত করে আপনি যদি একটি কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার বেশি টান জনিত সমস্যা দূর হবে। যাদের পিসিতে টান জনিত সমস্যা রয়েছে তারা রাতে একটি করে কলা খাবেন।তবে একদম ঘুমাতে যাওয়ার আগ দিয়ে কলা খাওয়া উচিত নয়। কলা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
আরো পড়ুনঃ মাসে লাখ টাকা আয় করার ১০ টি উপায়
রাতের বেলায় কলা খেলে যে ক্ষতি হয়
কলা এমন একটি ফল যা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। কলা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় এটাও আমরা সবাই জানি। সকালে কলা খেলে বেশি পরিমাণে উপকার পাওয়া যায় তবে রাতে যদি আপনি কলা খান তাহলে তা আপনার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
আমরা কলা খাই ঠিকই কিন্তু এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমরা সঠিকভাবে জানি না আর জানিনা বলে মাত্রারিক্ত কলা আমরা খেয়ে নি যার ফলে আমাদেরকে পরবর্তীতে ভুগতে হয়। আপনি যদি রোজ রাতে একটি করে কলা খেয়ে থাকেন তাহলে ঠিক আছে এতে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে শরীরে পটাশিয়াম এবং আয়রনের ঘাটতি দূর হবে।
কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত কলা খেয়ে ফেলেন তাহলে এটি আপনার জন্য ভালো হবে না। রাতের বেলায় আপনি যদি অতিরিক্ত কলা খান তাহলে আপনার হজমের সমস্যা তৈরি হবে। আবার যাদের একটুতেই ঠান্ডা জনিত সমস্যা আছে তারা যদি রাতে অতিরিক্ত কলা খান তাহলে তাদের ঠান্ডা লাগবে।
বিশেষ করে ঠান্ডা সময় রাত করে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ ঠান্ডার সময় অনেকেই কলা খান আর এই কলা খাওয়ার ফলে আপনার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
কলা খাওয়ার অপকারিতা
কলা খাওয়ার বেশ কয়েকটি অপকারিতা রয়েছে। আমরা অনেকেই কলা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। আমাদের যদি ক্ষুধা লাগে তাহলে ক্ষুধা মিটানোর জন্য আমরা কলা খেয়ে থাকি। তবে এই কলা আমাদের শরীরের জন্য ভালো হলেও এর বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে। আসুন কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঘুমের সমস্যা করেঃ কলা খেলে ঘুমের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। যাদের রাত্রিবেলায় ঘুম হয় না তারা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এমনকি দিনের বেলাতেও অতিরিক্ত কলা খাওয়ার অভ্যাস করা যাবে না।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা বাড়েঃ যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে কিংবা একটুতেই ঠান্ডা লাগে তারা কলা খাবেন না। অতিরিক্ত কলা খেলে আপনার ঠান্ডা জনিত সমস্যা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
ওজন বাড়িয়ে দিবেঃ আপনি যদি প্রতিদিন দুইটি কলা খান তাহলে আপনার শরীরের জন্য ঠিক আছে। এখন আপনি যদি প্রতিদিন চারটি কলার মত খান তাহলে আপনার ওজন অনেক বেড়ে যাবে।
সুগার বাড়িয়ে দিবেঃ যারা ডায়াবেটিকের রোগী আছেন তারা কলা এড়িয়ে চলবেন কেননা কলা শরীরের ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিবে যার ফলে আপনার ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাবে।
দাঁতের সমস্যা বাড়ায়ঃ কলা একটি উপকারী ফল। কিন্তু আপনার যদি দাঁতের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কলা খুব বেশি খাবেন না এর ফলে আপনার দাঁতের সমস্যা বেড়ে যাবে কেননা গলাতে সুগার রয়েছে।
লেখকের মন্তব্য
ওপরের আর্টিকেলে কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা অবশ্যই তা পড়ে বুঝতে পেরেছেন। যদি বুঝতে না পারেন তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে আসুন। কলা শুধু খেলেই হবে না কলার উপকারের দিকগুলো জানতে হবে এবং অপকারের দিকগুলো ভালোভাবে জানতে হবে।
আপনি যদি কলার উপকারিতা এবং অপকারিতা বুঝতে চান তাহলে আপনাকে কলা খেতে হবে কিন্তু অবশ্যই তা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় খেতে হবে নইলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। আশা করি আমার আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে সবার সাথে শেয়ার করুন।
স্কয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url