মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি উপায়

 মানসিক যা বর্তমান সময়ে একটি সমস্যা। বর্তমানে অনেকেই মানসিক চাপে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ হয়ে থাকে। যারা মানসিক চাপে থাকে তাদের মারা যাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

মানসিক-চাপ-কমানোর-কয়েকট- উপায়




মানসিক চাপ খুবই ভয়ঙ্কর একটি রোগ। তবে তরুণদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে আটজনের মধ্যে একজন মানসিক রোগে ভুগছে। ২০২০ সাল থেকে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি উপায়

মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি উপায়

মানসিক চাপকে বর্তমান সময়ে গুরুত্ব দিতে হবে। মানসিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তাকে ঠিকমতো অনেক সময় কন্ট্রোল করা যায় না তাই সময় থাকতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
শুধু কি প্রাপ্তবয়স্করায় মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে? উত্তরটা দিয়ে দিচ্ছি। উত্তরটা হলো না শিশু-কিশোর তরুণ সবাই মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও মানসিক সমস্যা লক্ষ্য করা যায় ১০০ ভাগের মধ্যে ৬৫ ভাগ শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। তাই মানসিক চাপ কমানোর দরকার। মানসিক চাপ কমানোর বেশ কিছু উপায় রয়েছে চলুন আমরা সেসব উপায় সম্পর্কে আলোচনা করি।

মানসিক চাপ কি

চাপ হল এক ধরনের নেতিবাচক অনুভূতি। সাধারণত মানসিক অস্বস্তি খেয়ে মানসিক চাপ বলা হয়ে থাকে। অল্প পরিমাণে চাপ ভালো কিন্তু এটি যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে এটি চিন্তার বিষয়। অনেকে মানসিক চাপের কারণে অজ্ঞান হয়ে যায়। মানসিক চাপ আমাদের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। যেমন বিরক্তি এবং রাগ বেড়ে যায়।
মানসিক চাপ বেড়ে গেলে মন মেজাজ বিগড়ে যায় সব সময় রাগ উঠে থাকে কাউকেই ভালো লাগেনা। পরিবার বন্ধু বান্ধব কাউকে সহ্য হয় না। কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না সব সময় নিজেকে বন্দী অবস্থায় রাখতে ভালো লাগে। যারা বাহিরে কাজ করেন তাদের দায়িত্ব অবহেলা শুরু হয়ে যায়। কর্ম ক্ষমতা কমে যায়।
অনেক সময় মানসিক চাপের কারণে কোন কিছু ভালো লাগে না খাওয়া দাওয়া করতে ইচ্ছা করে না ঘুম ঠিকমতো আসে না। আবার অনেকের ক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটে খাওয়ার রুচি বেড়ে যায় ঘুম বেড়ে যায়। শুধু বড় এবং তরুণ রায় নয় শিশু-কিশোরদের মাঝেও মানসিক রোগ দেখা যায়। এর কারণ হলো বাড়িতে নেতিবাচক পরিবেশ স্কুলের সহিংসতা ইত্যাদি।

মানসিক চাপের কারণ

সাধারণত বড়রা যেভাবে মানসিক চাপ অনুভব করে শিশুরা সাধারণত সেভাবে চাপ অনুভব করে না। বড়দের মানসিক চাপ খুবই সাধারণ ঘটনা কিন্তু একটি শিশু যদি মানসিক চাপে আক্রান্ত হয় তাহলে তার জীবনের জন্য সেটি হুমকি। শিশুরা মানুষের চাপে আক্রান্ত হলে তা কাউকে বলতে পারেনা তা নিজের মধ্যেই চেপে রাখে।
 মানসিক চাপ তারা চেপে রাখে বলে পরবর্তীতে তাদের অনেক সমস্যা হয়। সাধারণত আমরা শিশুদের মানসিক চাপকে গুরুত্ব দিই না কিন্তু এটি অবহেলা করলে চলবে না এতে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে বাধা গ্রস্থ হবে। এবার আসুন আমরা জেনে নেই মানসিক চাপের কারণ গুলো।

নেতিবাচক চিন্তাঃ শিশুদের সাধারণত নিজেদের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা আসে। তারা অনেক কিছু মানিয়ে নিতে পারে না এমনকি নিজে যা করছে তা সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারে না।
শারীরিক পরিবর্তনঃ বয়সন্ধিকালে সাধারণত শারীরিক পরিবর্তন আসে। এই শারীরিক পরিবর্তনের কারণে মন মানসিকতা পরিবর্তন আসে ফলে অনেক কিছু মানিয়ে নিতে তাদের সমস্যা হয়।
মনোমালিন্যঃ অনেক সময় দেখা যায় যে স্কুলে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মারামারি হয় বা মনোমালিন্য হয়। এই মনোমালিন্যের কারণে শিশুরা সাধারণত মানসিক চাপে বুকে থাকে।
প্রিয়জনের মৃত্যুঃ সাধারণত প্রিয়জন মারা গেলে শিশুদের মনে একটি ধাক্কা লাগে। এই ধাক্কা থেকে মানসিক চাপ বাড়ে। যার ফলে সে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়।
পরিবেশঃ পরিবেশগত কারণে শিশুদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হয়। বিশেষ করে বাসার আশেপাশের পরিবেশ। বাসার আশেপাশে পরিবেশ যদি খারাপ হয় তাহলে শিশুরা সাধারণত মানসিক চাপে আক্রান্ত থাকে।
পরিবারে অসচ্ছলতাঃ অনেক পরিবার আছে গরীব। তারা শিশুদের কোন চাহিদায় মেটাতে পারে না। শিশুরা কোন আবদার করলে সে আবদার রাখতে পারে না যার ফলে শিশুর উপর এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়
বাবা মায়ের বিচ্ছেদঃ অনেক পরিবারের বাবা-মায়ের তালাক হয়ে যায়। যার ফলে শিশুর মনে প্রভাব পড়ে। এর থেকে মানসিক চাপে সৃষ্টি হয়।

মানসিক চাপের লক্ষণগুলো

শরীরের মধ্যে চাপ সৃষ্টির ফলে এক ধরনের হরমোন সৃষ্টি হয়। যার নাম এড্রেনালিন। এটি একটি শিশুর শরীর এবং মন দুটোর উপরে প্রভাব ফেলে থাকে। মানসিক চাপ হলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া যায়। চলুন মানসিক চাপের লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া যায়।
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসঃ মানসিক চাপ বেড়ে গেলে দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস হবে। স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস থেকে যখন হার্টবিট বেড়ে যাবে এবং ঘাম হবে এবং জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া শুরু হবে তখনই বুঝতে হবে যে মানসিক চাপ রয়েছে।
মাথাব্যথা করবেঃ মানসিক চাপ বেড়ে গেলে সব সময় মাথাব্যথা করবে। সেইসাথে সব সময় মাথা ঘুরবে সইলে কোন শক্তি পাওয়া যাবে না।
বদ হজমঃ সবসময় বদহজম হলে বুঝতে হবে মানসিক চাপ রয়েছে। মানসিক চাপ বেড়ে গেলে খাবার হজম হতে চাই না যার ফলে পথ হজম হয়।
ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়াঃ কোন কারন ছাড়াই ওজন কমে গেলে বা বেড়ে গেলে বুঝতে হবে যে মানসিক চাপ রয়েছে
রুচি বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়াঃ অনেক সময় দেখা যায় যে কারো ক্ষেত্রে রুচি একদমই কমে গেছে আবার কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় যে রুচি অস্বাভাবিক রকমের বেড়ে গেছে এরকম হলে বুঝতে হবে যে মানসিক চাপ রয়েছে।
হঠাৎ অসুস্থঃ মানসিক চাপ থাকলে হঠাৎ হঠাৎ বিনা কারণে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়বে। অনেকে আছে যাদের কোনো কারণ নেই কিন্তু শরীর হঠাৎই নুয়ে পড়েছে এরকম হলে বুঝতে হবে যে মানসিক চাপ রয়েছে।

শিশু ও কিশোরদের মধ্যে যে কারণে মানসিক চাপ হয়

কিশোর কিশোরদের মধ্যে মানসিক চাপ ইদানিং বেশি লক্ষ্য করা যায়। বেশিরভাগ শিশু কিশোরী বদ মেজাজি হচ্ছে এর কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ। শিশু কিশোররা সাধারণত তাদের মনের কথা কারো সাথে শেয়ার করতে পারেনা। যার ফলে তাদের মধ্যে এক ধরনের চাপা খুব তৈরি হয়। ছোট শিশুদের মানসিক চাপের পিছনে সাধারণত পরিবার দায়ী। অল্প বয়সে শিশুদের গায়ে হাত তোলা তাদের মারধর করা পড়াশোনার জন্য চাপ দেওয়া। এসবই মূলত মানসিক চাপের কারণ।
আবার অনেক সময় বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্ক বিচ্ছেদের মত ঘটনা শিশুদের মনের ওপরে প্রভাব ফেলে থাকে। বিশেষ করে এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে দরিদ্র পরিবারে। আবার আরো একটি কারণ রয়েছে সেটি হচ্ছে স্কুলে টিচারদের নির্যাতন আজকাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে পড়া না পারলে টিচাররা শিশুদের বা কিশোরদের মারে যার ফলে তাদের মনের ওপরে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তাদের মনের মধ্যে স্কুলভীতি জন্মায় স্কুলে তারা যেতে যায় না।
বাবা মায়ের উচিত শিশু কিশোরদের সাথে কোমল আচরণ করা কোন কিছু তারা বুঝতে না পারলে তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলা। পড়াশোনার জন্য অতিরিক্ত চাপ কখনোই প্রয়োগ করা উচিত নয় কেননা অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার বয়স তাদের হয়নি। তারা যতটুকু মাথা নিতে পারবে ততটুকুই পড়া তাদের ওপরে চাপিয়ে দিতে হবে।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল যে কথায় কথায় শিশুদের গায়ে হাত দেয়া যাবে না এতে বাবা-মায়ের প্রতি তাদের একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। আপনি চেষ্টা করবেন যেকোনো কিছু আপনার সন্তানকে ঠান্ডা মাথায় বুঝানোর। এতে করে সে বুঝবে এবং আপনার কথা মতোই কাজ করবে। আপনি আপনার শিশুকে বোঝাতে পারলে দেখবেন একসময় তার কখনোই আর কোন কিছুই মানসিক চাপ মনে হবে না।
মানসিক-চাপ-কমানোর-কয়েকটি-উপায়

মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি কার্যকরী উপায়

সমস্যা আছে সমাধানও আছে। মানসিক চাঁদ ভয়ংকর একটি রোগ এই রোগ একবার কাউকে পেয়ে বসলে এখান থেকে বেরিয়ে আসা অনেক কঠিন তাই সময় থাকতে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে এর জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। আমরা যদি উপায় গুলো মেনে চলি তাহলে মানসিক চাপ অনেক অংশে কমে আসবে। তাই আসুন আমরা মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি কার্যকরী উপায় জেনে নিই।

হাঁটতে বের হনঃ একলা ঘরে অনেকক্ষণ কাজ আপনার মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে তাই কিছুক্ষণের জন্য ব্রেক নিন একটু হাঁটতে বের হন দেখবেন ভালো লাগবে। যদি খুব বেশি মানসিক  চাপ অনুভূত হয় তাহলে প্রকৃতির কাছাকাছি চলে যান দেখবেন যে মনটা হালকা হবে মনটা ফ্রেশ লাগবে এবং কাজেও মন বসবে অনেক সময় অক্সিজেনের অভাবে মানসিক চাপ বাড়ে কিন্তু কাজের ফাঁকে একটু যদি বাহিরে থেকে আপনি হাঁটাহাঁটি করে আসেন।
 তাহলে দেখবেন যে মানসিক চাপ অনেক অংশে কমে গেছে। তাই কাজ করার সময় আপনার যদি মনে হয় যে একটু বিরক্ত লাগছে তাহলে আপনি কাজ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে বাইরে থেকে 15 মিনিট হাটাহাটি করে আসুন। এতে করে আপনার মানসিক চাপ কমবে।
পোষা প্রাণী থাকলে সময় কাটানঃ যদি আপনার পোষা প্রাণী থাকে তাহলে তার সাথে সময় কাটান। গবেষণায় বলা হয়েছে আপনি যদি কোন প্রাণীর সাথে সময় কাটান তাহলে কটিসল নামক এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। 
যদি আপনার মনে হয় যে প্রাণীর সাথে সময় কাটালে তা মানসিক চাপ কমায় না তবে আপনি আজই চেষ্টা করে দেখতে পারেন এটি অসাধারণ একটি প্রক্রিয়া। তার নিজস্ব যদি কোন পোষা প্রাণী না থেকে থাকে তাহলে আশেপাশে প্রাণীদের সাথে সময় কাটান তাদেরকে কিছু খাওয়ান দেখবেন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে গেছে।
ধর্মীয় কাজে মন দিনঃ ধর্মীয় কাজে বেশি সময় দিলে মনটা অনেক ভালো লাগে। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে আমরা আমাদের মনের কথা বলতে পারি প্রাণ খুলে কথা বলতে পারি। নিয়মিত নামাজ পড়ুন কোরআন তেলাওয়াত করুন হাদিস পড়ুন দেখবেন মনটা অনেক ভালো লাগছে।
 ছেলেরা যারা আছেন বাসায় নামাজ পড়ার অভ্যাস থাকলে মসজিদে যেয়ে নামাজ পড়ার অভ্যাস করুন দেখবেন মনটা হালকা হয়ে গেছে। আপনার যে বিষয়গুলো চাপ মনে হচ্ছে সে বিষয়গুলো সৃষ্টিকর্তার কাছে হাত তুলে বলুন তার কাছে দোয়া প্রার্থনা করুন দেখবেন আপনার মনটা হালকা হয়ে গেছে মনে এক প্রশান্তি নেমে এসেছে
মোবাইল থেকে দূরে থাকুনঃ আধুনিক যুগের আমরা সবাই মোবাইলের প্রতি আসক্ত। এ মোবাইল ছাড়া আমাদের যেন চলে না সবকিছুতেই আমাদের মোবাইলের প্রয়োজন পড়ে। এর যেমন উপকার রয়েছে এর তেমন অপকারও রয়েছে। আপনি কেন মোবাইল ব্যবহার করবেন না? অবশ্যই করবেন। তবে তা একটা সীমার মধ্যে রেখে করবেন।
 এখন যদি আপনি সবসময়ই মোবাইল ঘাটাঘাটি করেন দেখবেন আপনার মন মানসিকতা অন্যরকম হয়ে গেছে আপনি ডিপ্রেশনে চলে যাবেন। অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি স্বাভাবিক কাজকর্মকে ব্যাহত করে তাই কাজের সময় মোবাইল থেকে দূরে থাকবেন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা দিনের সব সময় ফোনে অতিবাহিত করে তাদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা মানসিক চাপ বেশি। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।
কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগ রাখুনঃ মন ভালো রাখতে কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। অনেকেই আছেন কারো সাথে যোগাযোগ করেন না এক ঘরে ধরনের এদের মানসিক চাপ সব থেকে বেশি। আপন মানুষদের সাথে মন খুলে কথা বললে মন ভালো থাকে মানসিক চাপ কমে তাই আপনার মনের মধ্যে যত কথা রয়েছে তা আপন মানুষদের বলুন।
একমাত্র কাছের মানুষরাই আপনার সমস্যা বুঝতে পারবে বাইরের মানুষ তো আর বুঝতে পারবে না তাই আপনার যদি মনে হয় যে আপনার এখন ভালো লাগছে না বোরিং লাগছে সে ক্ষেত্রে আপনার কাছে যে কোন মানুষের সাথে আপনি কথা বলতে পারেন দেখবেন মনটা হালকা হয়ে গেছে।
ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুনঃ ভ্রমণ হলো শরীর এবং মনের জন্য অন্যতম ওষুধ। একঘেয়েমি জীবনে বেড়ানোর অনেক দরকার রয়েছে। আমরা কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকি কিন্তু কিছু সময় তো আমরা ফাঁকা থাকি এই ফাঁকা সময়েই আপনি ঘুরে আসুন কোথাও থেকে দেখবেন আপনার মনটা ভালো লাগছে।
যারা ভ্রমণ পিপাসু মানুষ যারা সব সময় বেরিয়ে বেড়ান তারা মানসিক চাপ মানসিক রোগ থেকে মুক্ত কিন্তু আমরা কাজে এতটাই ব্যস্ত বেড়ানো তেমন একটা সময় পাইনা দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ারও তেমন একটা সুযোগ হয়ে ওঠেনা। তাতে কি হয়েছে আপনি কাছাকাছি কোথা থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
শুক্রবারে তিনটা কম বেশি সবারই ছুটি থাকে আপনি চাইলে এই দিনটিতে বেরিয়ে পড়তে পারেন আপনার পরিবার বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজন যাকেই পান না কেন তাকে নিয়ে আপনি বেরিয়ে আসুন দেখবেন আপনার সারা দিনের ক্লান্তি সারা সপ্তাহের ক্লান্তি এক নিমিষেই দূর হয়ে গেছে।
পছন্দের কাজ করুনঃ পছন্দের কাজ করলে মানসিক চাপ কমে একেক জন মানুষের পছন্দ একেক রকম কারো পছন্দ বই পড়া কেউ খেলাধুলা করতে পছন্দ করেন কেউ ঘুরতে পছন্দ করেন। পছন্দের কাজ করলে মানসিক চাপ কমে মনটা শান্ত হয় মন রিলাক্স হয়। আপনি যখন নিজেকে এইসব কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখবেন তখন দেখবেন যে আপনার অনেক ভালো লাগছে।

মানসিক চাপ কমানোর ব্যায়াম

মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। ব্যায়াম করলে শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকে। সুস্থ মানুষের জন্য ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম মানুষকে শারীরিক ও মানসিক দুই দিক থেকেই শক্তিশালী করে তোলে। মানসিক চাপ কমানোর জন্য বেশ কিছু ব্যায়াম রয়েছে আসুন সে সকল ব্যায়াম সম্পর্কে আমরা এখন জেনে নেই।
হাটাহাটিঃ এই সহজ ব্যায়ামটি আপনি করতে পারেন। আপনি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে পারে। তবে যাদের মানসিক চাপ রয়েছে বা মানসিক অসুখ হয়েছে তারা প্রকৃতির মাঝে হাঁটার চেষ্টা করবেন বিশেষ করে পার্কে।
মেডিটেশনঃ ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন এটাই হলো মেডিটেশন। সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক মানুষকে মেডিটেশন করতে বলেন এতে শরীর এবং মন দুটোই শান্ত থাকে। যাদের মানসিক চাপ রয়েছে তারা মেডিটেশন করতে পারেন।
ইয়োগাঃ আমরা কম বেশি সবাই ইয়োগা ব্যায়ামের সাথে পরিচিত। আপনি যদি ডিপ্রেশনের মধ্যে থাকেন বা আপনার মানসিক চাপ যদি বেশি থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি ইয়োগা এক্সারসাইজ করতে পারেন আর এটি সবথেকে সুবিধা হল এটি আপনি বাসাতেও করতে পারেন।
সাইকেল চালানোঃ মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম একটি ব্যায়াম হলো সাইকেল চালানো আপনি যখন প্রকৃতির মাঝে সাইকেল চালাবেন স্বাভাবিকভাবে আপনার মানসিক চাপ কমে যাবে। এক ঘন্টা সাইকেল চালান।
মানসিক-চাপ-কমানোর-কয়েকটি-উপায়

মানসিক চাপ মোকাবেলা করার উপায়

মানসিক চাপ বেড়ে গেলে বা ডিপ্রেশনে চলে গেলে এর থেকে বের হয়ে আসা কঠিন তবে যতই কঠিন হোক না কেন এর মোকাবেলা করতে হবে। মোকাবেলা করার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। এবার আসুন মানসিক চাপ মোকাবেলা করার কয়েকটি উপায় আমরা জেনে নিই।
পরিবারের সাথে আলোচনাঃ আপনার যদি মানসিক চাপ বেড়ে যায় আপনার সবথেকে কাছের হলো পরিবারটাই আপনার মানসিক চাপের অবস্থা আপনি আপনার পরিবারের সাথে আলোচনা করুন। পরিবারের সাথে সমস্যা আলোচনা করলে সমাধান দ্রুত পাওয়া যায় এবং মনটা হালকা হয়।
অতিরিক্ত কাজের চাপ কমানোরঃ কাজ থাকতে পারে কিন্তু তার একটা সীমা আছে। আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাজ করলে স্বাভাবিকতা মাথায় চাপ হবে এর থেকে মানসিক রোগ হবে তাই মানসিক চাঁদ কমাতে গেলে অতিরিক্ত কাজ করা যাবে না।
কাউন্সিলিং করাঃ আপনি চাইলে কাউন্সিলিং করতে পারেন সেজন্য একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে পারেন তিনি আপনাকে বলে দিবেন কিভাবে কাউন্সিলিং করতে হবে। কাউন্সিলিং এ আপনি আপনার মনের সব কথা খুলে বলবেন এক্ষেত্রে আপনি আপনার সমাধান পাবেন।
ঔষধ গ্রহণ করুনঃ অনেক সময় মানসিক চাপ এতটাই তীব্র হয়ে যায় যে ঔষধ গ্রহণ করা ছাড়া উপায় থাকে না তখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। তাই আপনার যদি মনে হয় যে স্বাভাবিকভাবে আপনি নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে পারছেন না তাহলে আপনি ডক্টরের কাছে যান এবং তার পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করুন।
খারাপ বন্ধু এড়িয়ে চলুনঃ মানসিক চাপ কমাতে খারাপ বন্ধু আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে কেননা খারাপ বন্ধুর সাথে চললে আপনার মানসিক চাপ বাড়বে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি উপরের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে মানসিক চাপ কিভাবে কমানো যায়। এটি এমন একটি রোগ যা একবার পেয়ে বসলে এর থেকে বের হয়ে আসা অসম্ভব। বর্তমান সময়ে শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বড় বৃদ্ধ সবারই মানুষের অসুখ দেখা দিচ্ছে।
গবেষণা বলছে যত দিন যেতে থাকবে মানসিক অসুখ আরও বাড়তে থাকবে আর বিশেষ করে কিশোর এবং তরুণদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যাবে। আপনার যদি মনে হয় যে আপনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছেন না তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। আমার আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে সবার সাথে শেয়ার করুন




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্কয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url